অনেকেরমুখে দুর্গন্ধ হয়। মুখের দুর্গন্ধ নিজের জন্য যেমন বিরক্তকর, তেমনি আশপাশের মানুষের জন্য বিরক্তকর।কারও সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলতে গেলে বিব্রত লাগে, হাসতেও পারেন না প্রাণ খুলে। আমাকে নিয়ে কে, কি ভাবছে? এসব চিন্তা করে, সবসময় মনে একটি চাপা ভয় যেন থেকেই যায়।তাই মুখের দুর্গন্ধ অবশ্যই দূর করতে হবে। কথা বলার সময় কিংবা নিঃশ্বাসের সঙ্গে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বেরিয়ে আসে। মুখ ও শরীরের ভেতরের বিভিন্ন সমস্যার কারণে এটি হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো- সাইনোসাইটিস, ক্রমাগত পোস্ট নেজাল ড্রিপ, ক্রনিক এসিড রিফ্ল্যাক্স, লিভার ও কিডনির সমস্যা ইত্যাদি।মুখের দুর্গন্ধের পেছনে কারণ হতে পারে মুখগহ্বরে বা পেটে জন্মানো জীবাণু। আরও একটি কারণ হতে পারে শরীরে পানির পরিমাণ কমে যাওয়া।শরীরের জন্য এটা ক্ষতিকর না হলেও শরীরের নানা সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। আর অন্য কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলে মুখের দুর্গন্ধ অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
দুর্গন্ধ, যা হ্যালিটোসিস নামেও পরিচিত, একটি সাধারণ অবস্থা যা বিব্রত এবং উদ্বেগের কারণ হতে পারে। অনেক সময়ে কী খাচ্ছেন, তার উপরেই নির্ভর করে মুখ থেকে কেমন গন্ধ বেরোবে। পেঁয়াজ, রসুন, চিজ, সোডা, কমলা লেবুর রস খেলে বা মদ্যপান করলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। এই ধরনের সমস্যা সাময়িক। মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করলে বা চুইয়িং গাম খেলে অনেকটাই ঢেকে যায় গন্ধ।সিগারেট শুধু স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকরই নয়, মুখের দুর্গন্ধের জন্যেও দায়ী। ঠিক মতো দাঁত না মাজা বা ফ্লস না করলেও জীবাণু তৈরি হয় মুখে। তাতে দুর্গন্ধ হয় সহজেই।তবে মুখের দুর্গন্ধ যদি নিয়মিত সমস্যা হয়ে থাকে, তা হলে সেটা শরীরে অন্য সমস্যাও হতে পারে।
আসুনজেনে নিই মুখে দুর্গন্ধ দূর করার উপায়-
- মৌরি: এতে রয়েছে অ্যান্টিবায়োটেরিয়াল প্রোপার্টিজ, যা মুখ গহ্বরে তৈরি হওয়া ব্যাকটেরিয়াগুলো মেরে ফেলে। ফলে দুর্গন্ধে বদলে যায় সুগন্ধে। যখনই মনে হবে মুখ থেকে গন্ধ বের হচ্ছে, এক মুঠো মৌরি নিয়ে চিবিয়ে নেবেন। তা হলে আর চিন্তা থাকবে না।
- মেথি বীজ: এক চামুচ মেথি বীজ নিয়ে পরিমাণমতো পানির সঙ্গে মিশিয়ে চুলায় ফোটান। তার পর বীজগুলো ছেঁকে নিয়ে সেই জল চায়ের মতো পান করুন। কয়েক দিন এমনটি করলে দেখবেন মুখের গন্ধ কমে গেছে।
- লবঙ্গ - লবঙ্গতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রোপাটিজ, যা মুখে গন্ধ তৈরি করা ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে। মুখে একটি লবঙ্গ নিয়ে চুসতে থাকুন। দেখবেন গন্ধ একেবারে চলে গেছে।
- নিম: যাঁদের মাড়ি থেকে রক্ত বের হয় বা যাঁরা মুখের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থেকে দূরে থাকতে চান, তাঁরা নিমের দাঁতন ব্যবহার করতে পারেন। বহুকাল আগে থেকেই মুখের সুরক্ষায় প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হিসেবে নিম ব্যবহার হয়ে আসছে। নিম দাঁতের গোড়া শক্ত করে।
- লেবুর
খোসা : লেবুর খোসা ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে রেখে দিন। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হলো কাগজি বা কমলা লেবু। তবে পাতি লেবুর খোসাও ব্যবহার করা যায়। মুখে দুর্গন্ধ হচ্ছে বুঝতে পারলে শুকনা লেবুর খোসা চিবান। এতে দুর্গন্ধ থাকবে না।
- দারচিনি-
মুখের ভেতরে তৈরি হওয়া জীবাণু
মেরে ফলতে দারুচিনির কোনো বিকল্প নেই। তাই মুখ থেকে গন্ধ বেরোলেই এক চামচ দারুচিনির
পাউডারের সঙ্গে পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে গরম করে নিন। তার পর সেই পানি ছেঁকে নিয়ে কুলকুচি
করুণ। দেখবেন গন্ধ চলে যাবে।
- লবণ-পানির গার্গল: হালকা গরম লবণ-পানি দিয়ে গার্গল করলে তা মুখের খারাপ
ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে পারে এবং আপনার মুখের গন্ধকে সতেজ করে তুলতে পারে। লবণ-পানি
মুখের মধ্যে গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে দূরে করে। আপনাকে এক গ্লাস পানিতে
আধা চা চামচ লবণ মেশাতে হবে এবং বাইরে যাওয়ার আগে এটি দিয়ে গার্গল করতে হবে।
- পানি: দিনে কম পানি পান করলেও
মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে। পানি মুখ থেকে ব্যাকটেরিয়া বের করে দিতে সাহায্য করে এবং
এটিকে রোধ করে। এটি আপনার শ্বাস সতেজ রাখতে সাহায্য করে। তাই যদি আপনার নিঃশ্বাসে প্রচুর
গন্ধ অনুভব করেন তবে দিনে প্রচুর পানি পান করুন। আপনার নিঃশ্বাসের গন্ধকে সতেজ করতে
পানিতে অর্ধেকটা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন।
- পুদিনাপাতা: একে প্রাকৃতিক মাউন্ট ফ্রেশনার বলা যেতে পারে। তাই মুখে গন্ধ হলে ২-৩টি পুদিনাপাতা নিয়ে চিবিয়ে ফেলুন।
- এলাচ: এলাচ মুখে রেখে দিন। দেখবেন অল্প সময়ের মধ্যেই দুর্গন্ধ একেবারে কমে যাবে।
এছাড়া আরও যেভাবে মুখের দূর্গন্ধ দূর করবেন:
- জিভ পরিষ্কার করতে হবে। দাঁত মাজলেই যে মুখের সব জীবাণু চলে যাবে, এমন নয়। প্রতিবার দাঁত মাজার সময় জিভটাও পরিষ্কার করুন।
- প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন: হাইড্রেটেড থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থগুলিকে দূর করতে সাহায্য করবে যা নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ হতে পারে।
- গন্ধযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন: রসুন এবং পেঁয়াজের মতো কিছু খাবার নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে। এই খাবারগুলি আপনার গ্রহণ সীমিত করার চেষ্টা করুন বা এগুলি খাওয়ার পরে আপনার দাঁত ব্রাশ করুন।
- ধূমপান ত্যাগ করুন: ধূমপান মুখের দুর্গন্ধের একটি প্রধান কারণ। আপনি যদি ধূমপান করেন তবে তা ত্যাগ করা নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- চিনিহীন গাম চিবানো: চিনিহীন আঠা চিবানো লালা উৎপাদনকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করতে পারে, যা ব্যাকটেরিয়া বের করে দিতে এবং খাদ্যের কণা ভেঙ্গে দিতে সাহায্য করে যা নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে।
- নিয়মিত ব্রাশ এবং ফ্লস: সঠিক মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি হল মুখের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপায়। দিনে অন্তত দুবার দাঁত ব্রাশ করুন এবং শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে এমন খাবারের কণা এবং ফলকগুলি দূর করতে দিনে অন্তত একবার ফ্লস করুন।
- মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন: মাউথওয়াশ মুখের ব্যাকটেরিয়া কমাতে এবং শ্বাস সতেজ করতে সাহায্য করতে পারে।
- হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে নিন। সেই পানি মুখ কুলকুচি করুন দিনে দুইবার। রাতে ঘুমনোর আগে এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর। তাতে মুখে দুর্গন্ধের সমস্যা অনেকটাই কমবে।
- মুখের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থেকে দূরে করতে নিমের মাজন ব্যবহার করতে পারেন। বহুকাল আগে থেকেই মুখের সুরক্ষায় প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হিসেবে নিম ব্যবহার হয়ে আসছে। নিম দাঁতের গোড়া শক্ত করে।
সতর্কতা: এসবের পরও যদি বুঝতে পারেন দুর্গন্ধ যাচ্ছে না, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
Writter:
Raju Munshi
Social Media Marketer & Blogger
For Any Help Please Contact: https://www.facebook.com/crraju2
My Others Channels:https://www.youtube.com/channel/UCELWUIHTy8uFrDSFL1cLbSQ
Follow Me-
Facebook-https://www.facebook.com/profile.php?id=100085407597310
Instagram -
LinkedIn-https://www.linkedin.com/in/raju-munsi-542080253/

0 Comments